প্রকাশকালঃ 2025-11-03 12:38:37

চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জিনজিয়াং এখন দেশটির নতুন পর্যটন স্বর্গে পরিণত হয়েছে। ২০২৪ সালে প্রায় ৩০ কোটি মানুষ সেখানে ভ্রমণ করেছেন। মনোমুগ্ধকর পাহাড়, হ্রদ, মরুভূমি ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যে মোহিত হয়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা ভিড় জমাচ্ছেন এই অঞ্চলে। তবে এই সৌন্দর্যের আড়ালেই লুকিয়ে আছে এক বিতর্কিত ও অন্ধকার অধ্যায়।
এক দশক আগেও জিনজিয়াং ছিল চীনের সবচেয়ে অশান্ত অঞ্চলগুলোর একটি। এখানকার তুর্কিভাষী মুসলিম জনগোষ্ঠী—উইঘুরদের ওপর দীর্ঘদিন ধরেই চীনা সরকারের দমন-পীড়নের অভিযোগ রয়েছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, অন্তত এক মিলিয়নেরও বেশি উইঘুর মুসলিমকে তথাকথিত ‘পুনঃশিক্ষা শিবিরে’ আটক রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। — খবর বিবিসির।
এখন অবশ্য জিনজিয়াংয়ের চেহারা বদলে যাচ্ছে দ্রুত। বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগে গড়ে উঠছে আধুনিক অবকাঠামো, বিলাসবহুল রিসোর্ট ও আন্তর্জাতিক হোটেল চেইন। চীনা কর্তৃপক্ষের লক্ষ্য—২০৩০ সালের মধ্যে বছরে ৪০০ মিলিয়ন পর্যটক আকর্ষণ করা এবং পর্যটন খাত থেকে এক ট্রিলিয়ন ইউয়ান আয় নিশ্চিত করা। সামাজিক মাধ্যম ও টেলিভিশন নাটকে ‘অদ্ভুত সুন্দর জিনজিয়াং’কে উপস্থাপন করা হচ্ছে ‘চীনের গোপন স্বর্গ’ হিসেবে।
তবে সমালোচকেরা বলছেন, এই নতুন সাজানো জিনজিয়াং কেবল সরকারের নির্মিত মুখোশ। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত উইঘুর অধিকারকর্মী ইরাদে কাশগারি বলেন, “সরকার এখন আমাদের সংস্কৃতিকে পর্যটনের পণ্য হিসেবে বিক্রি করছে। তারা দেখাচ্ছে, আমরা শুধু রঙিন পোশাকে নাচতে জানি—এর বাইরেও আমাদের অস্তিত্ব আছে, কিন্তু তা তারা আড়াল করছে। আমি আমার জন্মভূমিতে ফিরতে পারি না, অথচ হাজারো পর্যটক সেখানে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটাই জিনজিয়াংয়ের প্রকৃত ট্র্যাজেডি।”