প্রকাশকালঃ ২৯ নভেম্বর ২০২৫, বিকাল ৬:১২ সময়

মানতে হবে সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজার–সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হচ্ছে। এবার থাকছে রাতে অবস্থানের সুযোগও। তবে প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন এবং সবাইকে সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। ভ্রমণ সুবিধা চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা দুই মাস।
কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া জেটিঘাট থেকে সকাল ৭টায় জাহাজ ছেড়ে যাবে, এবং পরদিন বিকেল ৩টায় সেন্টমার্টিন থেকে কক্সবাজারে ফিরে আসবে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম জানিয়েছেন,
এমভি কর্ণফুলি এক্সপ্রেস, এমভি বারো আউলিয়া, কেয়ারি সিন্দাবাদ ও কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন নামে চারটি জাহাজ চলাচলের অনুমতি পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “সেন্টমার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে।” আগে টেকনাফ থেকে জাহাজ চললেও নিরাপত্তা বিবেচনায় এখন সরাসরি কক্সবাজার থেকে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে জাহাজ চলবে।
সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, রাত্রিযাপনের অনুমতি না থাকায় নভেম্বর মাসে পর্যটকদের আগ্রহ কম ছিল, ফলে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। “তবে ১ ডিসেম্বর থেকে দুই মাস রাত কাটানোর সুযোগ থাকায় পর্যটকদের আগ্রহ বেড়েছে এবং জাহাজ চলাচল শুরু করা হবে।”
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন জানান, প্রতিদিন দুই হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে যেতে পারবেন না। এজন্য নুনিয়ারছড়া জেটিঘাট ও সেন্টমার্টিন জেটিঘাটে পৃথক তল্লাশি চালানো হবে।
🔹 অনুমতি ছাড়া কোনো নৌযান চলবে না (বিআইডব্লিউটিএ ও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে)।
🔹 শুধুমাত্র অনলাইনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টাল থেকে টিকিট কিনতে হবে।
🔹 প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে, নইলে তা অকার্যকর বলে গণ্য হবে।
🔹 নভেম্বর: শুধুমাত্র দিনের ভ্রমণ, রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ।
🔹 ডিসেম্বর ও জানুয়ারি: রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে।
🔹 ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
🔹 দ্বীপে বিবেচিত সময়ের বাইরে সময়সীমা অমান্য করে অবস্থান করা যাবে না।
🔹 রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি নিষিদ্ধ।
🔹 কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ/বিক্রি এবং সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, শামুক–ঝিনুকসহ যেকোনো জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
🔹 মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ কোনো মোটরচালিত যান সৈকতে চলাচল করবে না।
🔹 পলিথিন বহন নিষিদ্ধ, আর একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক ব্যবহার নিরুৎসাহিত।
🔹 নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক বহনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সরকার আশা করছে, নতুন নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের নাজুক পরিবেশ ও অনন্য জীববৈচিত্র্য সংরক্ষিত থাকবে, এবং এ দ্বীপটি দায়িত্বশীল ও পরিবেশবান্ধব পর্যটনের একটি উদাহরণ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
✳ দ্বীপ ভ্রমণে আগ্রহী পর্যটকদের জন্য তাই সতর্ক ও দায়িত্বশীল আচরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।